সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

প্রয়াত বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, চলচ্চিত্র জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল

লিখেছেন ফারুক আহমেদ :
চলচ্চিত্র পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত

বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত করোনাকালে সবাইকে ছেড়ে চলে গেলেন। তাঁর প্রয়াণে  চলচ্চিত্র জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। 

 মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শোকবার্তায় জানিয়েছেন, "বিশিষ্ট চিত্রপরিচালক  বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের  প্রয়াণে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি আজ
কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। 

তাঁর  পরিচালিত উল্লেখযোগ্য ছবি 'তাহাদের  কথা', 'বাঘ বাহাদুর', 'উত্তরা', 'চরাচর', 'মন্দ মেয়ের উপাখ্যান', 'কালপুরুষ' ইত্যাদি।  

বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত স্পেন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে 'লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড', এথেন্স আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে 'গোল্ডেন অ্যাওয়ার্ড', বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে 'গোল্ডেন বিয়ার' পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার সহ অজস্র সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। 

তাঁর মৃত্যুতে চলচ্চিত্র  জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। 

আমি বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের  পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।"

পশ্চিমবাংলার উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু তাঁর ফেসবুকে সমবেদনা জানিয়ে লিখেছেন "বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত জন্ম : ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৪ মৃত্যু : ১০ জুন ২০২১। প্রয়াত হলেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্র পরিচালক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। প্রথম জীবনে অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেন স্কটিশ চার্চ কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। অর্থনীতির অধ্যাপক হিসেবে বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর কর্মজীবন শুরু হয়েছিল। ১৯৬৮ সালে তথ্যচিত্র তৈরি করে পরিচালনায় হাতেখড়ি হয়েছিল তাঁর। ১৯৭৮-এ প্রথম পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি 'দূরত্ব' পরিচালনা করে জাতীয় পুরস্কারের শিরোপা পেয়েছিলেন তিনি। 'নিম অন্নপূর্ণা', 'গৃহযুদ্ধ', 'ফেরা', 'উত্তরা' তাঁর উল্লেখযোগ্য সিনেমা। বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত পরিচালিত ৫টি ছবি - 'বাঘ বাহাদুর', 'চরাচর', 'লাল দরজা', 'মন্দ মেয়ের উপাখ্যান', 'কালপুরুষ' জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে।‘স্বপ্নের দিন’ ও ‘উত্তরা’ ছবির জন্য পরিচালক হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। দেশের বাইরে বিদেশেও একাধিক সম্মান পেয়েছেন বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত। লোকার্নো, কান, ভেনিস, বার্লিনের মতো নামজাদা আন্তর্জাতিক ফেস্টিভ্যালে তাঁর ছবি প্রশংসিত হয়েছে।চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করলেও তাঁর চলাচল ছিল সাহিত্য জগতেও। কবি বুদ্ধদেবের কলমে উঠে এসেছে একাধিক কবিতা, যা নিয়ে আজও চর্চা হয়। তাঁর কাব্যগ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘রোবটের গান’, ‘ছাতা কাহিনি’, ‘গভীর আড়ালে’ ইত্যাদি।বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের প্রয়াণে শোকের ছায়া গোটা চলচ্চিত্র মহলে।তাঁর মৃত্যুতে চলচ্চিত্র জগতের অপূরণীয় ক্ষতি হল। তাঁর পরিবার-পরিজন ও অসংখ্য অনুরাগীদের প্রতি রইল গভীর সমবেদনা।"

কবি সুবোধ সরকার লিখেছেন, "আমি কৃষ্ণনগর থেকে তখন তাঁকে পোস্টকার্ড লিখতাম। এক একটা পোস্টকার্ডের দাম ছিল পনেরো পয়সা। তিনি প্রতিটা চিঠির উত্তর দিতেন। তখনো তিনি 'দূরত্ব ' বানাননি। তৈরি করেননি 'নিম অন্নপূর্ণা'।
'কফিন কিম্বা স্যুটকেস ' পড়ে পোস্টকার্ডে লিখেছিলাম 'আমি যদি কোনোদিন ফিল্ম করি, এই বইটির কবিতাগুলো হবে আমার চিত্রনাট্য'। 
সাতাশ বছর আগে দেশ পুজো  সংখ্যায় আমার একটি কবিতা প্রকাশিত হয় , নাম  ' ঘুষ '। কবিতাটা পড়ে বুদ্ধদেবদা আমাকে ফোন করে বলেছিলেন, সুবোধ,  এই কবিতাটা আমি ফিল্ম করব।

বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত বাংলা ভাষার প্রতি-কবিতায় ভাস্কো পপার মতো , মিরোস্লাভ হলুবের মতো।অত আগে কম্পিউটার নিয়ে ওরকম কবিতা আর কেউ লেখেননি। 'হাত' নিয়ে ওরকম অ্যান্টি পোয়েট্রি আর কেউ লেখেননি। আমি অনুকরণ  করতে গিয়ে  ফেল করেছি। 
আর আন্তর্জাতিক সিনেমায় , তিনি রেখে গেলেন এক সোনার খনি। প্রণাম।"

চলচিত্র নির্মাতা বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত বাঙালির গর্ব। তাঁর অকাল মৃত্যুতে শোকাভিভূত বাংলা। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সিনেমা প্রেমীদের তরফেও জানানো হয়েছে শোক প্রকাশ।

মন্তব্যসমূহ

বাংলা সাহিত্য : বহুল-পঠিত লেখাগুলো পড়ুন

পশ্চিবঙ্গে কবিতা উৎসব ২০২৩, উদ্বোধন করলেন ব্রাত্য বসু

পশ্চিবঙ্গের বৃহত্তম কবিতা উৎসব ২০২৩ উদ্বোধন করলেন ব্রাত্য বসু ফারুক আহমেদ বুধবার রবীন্দ্র সদন একতারা মঞ্চে, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের অন্তর্গত কবিতা আকাদেমির আয়োজনে ৭ম কবিতা উৎসব ২০২৩-এর শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠান দাগ কেটেছে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ভারতের বৃহত্তম কবিতা উৎসবের শুভ উদ্বোধন করলেন উচ্চশিক্ষা এবং বিদ্যালয় শিক্ষা বিভাগের মন্ত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির সভাপতি শ্রী ব্রাত্য বসু, উপস্থিত ছিলেন সভামুখ্য সুবোধ সরকার, মাননীয় সভাপতি, পশ্চিমবঙ্গ কবিতা আকাদেমি, মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, আলাপন বন্দ্যেপাধ্যায়, ব্রততী বন্দ্যেপাধ্যায়, প্রণতি ঠাকুর, কৌশিক বসাক প্রমুখ। রবীন্দ্রসদন, শিশির মঞ্চ, বাংলা আকাদেমি সভাগৃহ, জীবনানন্দ সভাঘর, অবনীন্দ্র সভাঘর, নন্দন-৩, চারুকলা পর্ষদ সংলগ্ন প্রাঙ্গণ ও একতারা মুক্তমঞ্চে উৎসব শুরু হয়েছে। ৩ মে থেকে চলবে ৬ মে ২০২৩ পর্যন্ত। ভারতের বৃহত্তম কবিতা উৎসবে দ্বিতীয় দিনেই শিশির মঞ্চে কবিতা পাঠ করলেন কবি ও উদার আকাশ পত্রিকার সম্পাদক ফারুক আহমেদ সহ বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট কবি।

আসাদ চৌধুরী এখন থেকে চিরজীবিত : মুহম্মদ নূরুল হুদা

বাংলা ও বাঙালির প্রিয় কবি আসাদ চৌধুরী এখন থেকে চিরজীবিত বাংলা ও বাঙালির প্রিয় কবি আসাদ চৌধুরী মুহম্মদ নূরুল হুদা, মহাপরিচালক, বাংলা একাডেমি বাংলা সাহিত্যের প্রখ্যাত কবি, বাংলা একাডেমির ফেলো ও সাবেক পরিচালক, বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদ চৌধুরী আজ ০৫ই অক্টোবর ২০২৩ কানাডার একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন)। এখন থেকে তিনি চিরজীবিত। তিনি অনন্তলোকে চিরশান্তিতে থাকুন। আসাদ চৌধুরী আধুনিক বাংলা কবিতায় এক অনিবার্য নাম, বাংলাদেশের ষাটের দশকের কবিতা আন্দোলনের কীর্তিমান ব্যক্তিত্ব। তাঁর কবিতায় বাংলার প্রকৃতি ও বাংলাদেশের জনজীবন যেমন অনুপম ব্যঞ্জনায় ভাস্বর হয়েছে তেমনি এদেশের সুদীর্ঘ সংগ্রামী ঐতিহ্য অসাধারণ স্বাতন্ত্র্যে ভাষারূপ পেয়েছে। কবিতার পাশাপাশি প্রবন্ধ, শিশুসাহিত্য, অনুবাদ, জীবনী, ভ্রমণকাহিনিসহ বিচিত্র সাহিত্যক্ষেত্রে ছিল তাঁর সফল ও স্বচ্ছন্দ বিচরণ। সমকালীন বাংলা সাহিত্যে তিনি একজন বহুমাত্রিক স্রষ্টা। বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত তাঁর 'কোন অলকার ফুল', 'বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ' কিংবা 'সংগ্রামী নায়ক বঙ্গবন্ধু'-এর মতো বইগুলো এদেশের কয়েক প্রজন্মের

বেস সাহিত্য উৎসব ২০২৪

বেস সাহিত্য উৎসব ২০২৪ BASE Literary Festival 2024 বাঙালি মুসলিমদের পিছিয়ে পড়ার বহু কারণ বিভিন্ন সময়ে চিহ্নিত করা হয়, তার মধ্যে অনেক কিছু নিয়েই বিতর্ক থাকতে পারে কিন্তু একটি কারণ সম্পর্কে সকলেই সহমত পোষণ করেন, মুসলিম মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবি শ্রেণীর অভাব। সেই অভাব যে পূরণ হয়েছে, সেই প্রমাণ হাজির করতেই বেঙ্গলি অ্যাকাডেমিয়া ফর সোশ্যাল এম্পাওয়ারমেণ্ট বা সংক্ষেপে বেস সম্প্রতি একদিনের সাহিত্যসভার আয়োজন করেছে রবীন্দ্রতীর্থে (নিউটাউন) গত ১১ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪। ঐ সভায় ষাটের অধিক মুসলিমসহ অন্যান্য প্রান্তিক সমাজের সাহিত্যিক, অনুবাদক, আলোচক, অধ্যাপক ও শিক্ষকদের উপস্থিতি শিক্ষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি জগতে মুসলিম সমাজে নিজস্ব পরিসর সৃষ্টি করে নেওয়ার প্রমাণ উপস্থাপিত করে, যা উল্লেখিত সাহিত্য সভার নিঃসন্দেহে এক উল্লেখযোগ্য দিক। ঐ সাহিত্য সভার দ্বিতীয় উল্লেখযোগ্য দিক ছিল সভার মূখ্য আলোচ্য বিষয় "প্রান্তিক সাহিত্যচর্চার পরিসর"। তৃতীয় কিন্তু গুরুত্বের দিক থেকে কোন অংশেই কম নয় যে বিষয়টি তা হল প্রান্তিক সাহিত্যের দুই ধারা দলিত সাহিত্যিক এবং মুসলিম প্রান্তিক সাহিত্যিকদের মধ্যে ভাবের আদান প্রদানের এ

লেখা পাঠাতে চান? লেখা পাঠানোর নিয়ম জানতে ক্লিক করুন নিচের 'লেখা পাঠান' ট্যাবে

-----------------------------------------------------------------------
-----------------------------------------------------------------------

🙏 সবিনয় আবেদন 🙏

সুধী পাঠক ও লেখকবন্ধু,

বাংলা সাহিত্য : অনলাইন ম্যাগাজিন যেহেতু কোন বিজ্ঞাপন গ্রহণ করে না, সেহেতু ম্যাগাজিন পরিচালনার সমস্ত খরচ ম্যাগাজিন কতৃপক্ষকেই বহন করতে হয়। বর্তমান দুর্মূল্যের বাজারে এই ভার বহন করা দুরহ হয়ে উঠছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা আপনাদের পত্রিকার গ্রহক হওয়ার অনুরোধ করছি। 

গ্রাহক মুল্য বছরে ১০০ (এক শত) টাকা মাত্র।

নিচের ব্যাংক একাউন্টে গ্রাহক চাঁদা প্রদান করে Transaction ID ইমেল করে পাঠালেই আপনি গ্রাহক হয়ে যাবেন।

আপনারা চাইলে আমাদের আর্থিকভাবে সহায়তাও করতে পারেন।

👩 যে কোন পরিমাণ ( সর্বনিম্ন 10 টাকা / দশ টাকা ) সহায়তা সম্মানের সঙ্গে গ্রহণ করা হবে।
অর্থ পাঠানোর একাউন্টসের বিবরণ :
1) Account Holder's Name : K. N. Mondal
2) Bank Name : Bank Of Baroda
3) Account No. 2759-0100-0151-24
4) IFS CODE : BARB0BRAPUR (Fifth Character is ZERO)
অর্থ পাঠালে অবশ্যই ইমেল করে ট্রাঞ্জাকশন আইডি (Transaction ID) পাঠাতে ভুলবেন না।
আপনার পাঠানো অর্থের অবশ্যই প্রাপ্তি স্বীকার করা হবে।
আমাদের EMAIL ID : nehacomputeraids@gmail.com